Sun Sun Sun Sun Sun
English

বিশেষ মানুষ হয়ে সুস্থ থাকার উপায়

|| ড. এম হেলাল ||
সর্বক্ষেত্রে ভালোর চর্চা এবং ধৈর্য ও ঈমান মজবুত রাখার মাধ্যমে সুস্থতালাভ
সর্বক্ষেত্রে ভালোকে `হ্যাঁ` এবং মন্দকে `না` বলার মাধ্যমে চিন্তা ও মননে উৎকর্ষলাভ করা যায়; হওয়া যায় বিশেষ মানুষ বা উন্নততর মানুষ। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ জীবনে এরূপ নীতি বা আদর্শের লালন এবং আশপাশের মানুষদেরকে অনুরূপ বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে যে কেউ নিজের শারীরিক, মানসিক, আত্মিক উৎকর্ষ সাধন তথা সুস্থতালাভ করতে পারে; সে সাথে অবদান রাখতে পারে পারিপার্শ্বিক বা সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও। এরূপ বজ্রকঠিন শপথের প্রোএকটিভ ও পজিটিভ চিন্তার বিশেষ মানুষরা কেবল শারীরিক সুস্থতাই লাভ করেন না, এঁরা মহাবিশ্বের মহাবিস্ময়রূপেও আবির্ভূত হয়ে থাকেন। অন্যদিকে যারা `হ্যাঁ`কে না এবং `না`কে হ্যাঁ বলতে অভ্যস্ত, তারা মানসিক চাপে থাকেন। এরা নেতিবাচক জগতের মানুষ বিধায় সত্যের অনুসন্ধানে বা সত্যাশ্রয়ে বেশিদূর এগুতে পারেন না। তাই এরা মানসিক অশান্তিতে ভোগেন এবং নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য অন্যের ওপর চাপাতে থাকেন।

আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টি জগতের সেরা জীবের দাবিদার হতে হলে নিজের বিবেক ও বুদ্ধির কাছে নিশ্চিত করতে হবে সকল ভালোত্ব। অন্য প্রাণির তুলনায় শ্রেষ্ঠ গুণ ধারণ করতে না পারলে সৃষ্টির সেরা জীবের দাবিদার হওয়া কতটুকুন যৌক্তিক, তা সংশয়ের ঊর্ধ্বে নয়। আরও সংশয় যে চোর-ডাকাত-খুনি-মিথ্যাচারী-প্রতিহিংসাপরায়ণ, জিঘাংসু তথা প্রতিক্রিয়াশীল বা পরশ্রীকাতররা কী আশরাফুল মাখলুকাত?

এরূপ ব্যক্তি অনেকক্ষেত্রে বিত্ত-বৈভব ও ক্ষমতার অধিকারী হয়ে আপাত সুখের জীবন ভোগ করছে বলে বাইরে থেকে মনে হলেও একটু খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে যে ভেতরে বা অন্তর্জগতে এরা ভালো নেই, এদের জীবনের চূড়ান্ত পরিণতি সুখের হয় না; এমনকি বংশপরম্পরায়ও চলতে থাকে দুর্ভোগ-দুর্গতি।

অন্যদিকে প্রকৃত আশরাফুল মাখলুকাত এবং স্রষ্টার নৈকট্যলাভে সক্ষমদের জন্য রোগ-শোক-জরা-ব্যাধি অনেকক্ষেত্রে ঈমানের পরীক্ষারূপেও এসে থাকে। এরূপ মানুষদের ধৈর্য ও ঈমানের প্রচন্ড জোরের প্রমাণ সাপেক্ষে যেকোনো রোগবালাই থেকে মুক্তি এবং বিপদ-আপদ থেকে উদ্ধারের দায়িত্ব নিয়ে থাকেন স্বয়ং স্রষ্টা। তাই খাদ্য গ্রহণ থেকে শুরু করে জীবনযাপনের প্রতি পদে তথা সর্বক্ষেত্রে সর্ববিষয়ে ইতিবাচক বা পজিটিভ ধ্যান-ধারণা লালন ও উন্মেষের নিশ্চয়তার মাধ্যমে সেই আপাত পরীক্ষায় চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পথে এগুতে হয়; অপেক্ষা করতে হয়, বিশ্বাস রাখতে হয়, ধৈর্য ধারণ করতে হয়।

শারীরিক-মানসিক-আত্মিক উৎকর্ষতা বৃদ্ধিসহ সুস্থতা ও শতায়ু লাভের জন্য সর্বক্ষেত্রে সর্বদা ভালোকে আঁকড়ে ধরা এবং মন্দকে বর্জনের অভ্যাস ও সংস্কৃতি তৈরি করা অত্যাবশ্যক। তাতে আত্মসুখ, আত্মবিশ্বাস, জনপ্রিয়তা ও সমৃদ্ধি বাড়বেই। ভালো-মন্দের শুধু সমর্থন বা বিরোধিতাই নয়, এ দর্শন ও সংস্কৃতির আদর্শে আত্মনিবেদিত হতে হবে। সর্ব আচার-আচরণে ভালোর চর্চার পাশাপাশি মুখেও বলতে বা আওড়াতে হবে; অর্থাৎ ইতিবাচক ও ভালো কথা মুখে বলে নিজ কানে শুনতে হবে এবং অন্যকেও শোনাতে হবে; তবে ঝগড়ার সুরে নয়, প্রোএকটিভ ও পজিটিভ এটিচিউডে। যেমন কেউ আপনার সামনে মিথ্যা কথা বললে, হয়রানি করলে কিংবা গালমন্দ বা কটুক্তি করলে, অমানবিক আচরণ করলে তাকে বলবেন যে আপনার এ কথা বলা বা এরূপ আচরণ করা ঠিক হয়নি; এটি আমি পছন্দ করিনি; আপনার Sorry বলা উচিত। তেমনিভাবে কারুর ভালো আচরণ দেখলে তাকে Thanks দিবেন, প্রশংসা বা Appreciate করবেন। এককথায়, ভালো ও মন্দের ব্যবধান করে পুরস্কার ও তিরস্কারের ব্যবস্থা যতবেশি নেবেন, সমাজে ততবেশি কল্যাণ ও মঙ্গল সাধিত হবে, মানবতা উজ্জীবিত হবে; জীবন হবে সুখময়, বিশ্বে আসবে শান্তি ও সমৃদ্ধি।

ভালো-মন্দের অন্তর্দ্বন্দ্ব দূর এবং বিশেষ মানুষ হয়ে সুস্থতা লাভের উপায়
প্রিয় পাঠক, এ পর্বে একটু কঠিন বিষয়ে আলোচনা এবং কঠিন পরীক্ষা। চলুন, খতিয়ে দেখি দৈনন্দিন কাজকর্মের শতকরা কতভাগ স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিকভাবে করে আমরা সুখ ও সুস্থতার পথে এগুচ্ছি; আর কতভাগ অস্বাভাবিক ও অপ্রাকৃতিক কাজ করে মানসিক যন্ত্রণা, অসুস্থতা ও আয়ুক্ষয়ের দিকে যাচ্ছি। আমরা যদি সৃষ্টির সেরা জীব তথা প্রকৃত মান+হুশ হয়ে থাকি, তাহলেতো যেকোনো ভালো বিষয়কে গ্রহণ ও মন্দকে বর্জন করার কথা এবং তা-ই স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক। সুস্থ ও স্বাভাবিক চিন্তা বা কাজ যতবেশি করব, ততই আমরা সুস্থ থাকব। অন্যদিকে অস্বাভাবিক ও কৃত্রিম কাজ যতবেশি করব, ততই যে অসুখী ও অসুস্থ হব বা দুঃখ-কষ্ট পাব এবং আয়ুক্ষয় করব সে বিষয়টিও স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক।

সৎকর্মের সুফল এবং মন্দকর্মের ঘৃণ্য পরিণতি মানুষকেতো পেতেই হবে। মানুষের শুভকর্ম ও অপকর্মের পরিণতি প্রাপ্তিই মহাজাগতিক শৃঙ্খলা তথা ইনসাফের শেষ কথা। এ থেকে নিস্তারের কোনোই পথ নেই।

জ্ঞান বা বুদ্ধির স্বল্পতার কারণে আমরা অনেক ভালো বিষয়কে গ্রহণ করি না, ভালোত্বের প্রতি দৃঢ়তা রাখি না অর্থাৎ ভালোত্ব থেকে দূরে থাকি; ফলে বঞ্চিত হই সত্য, সুন্দর ও সমৃদ্ধি থেকে। আবার জ্ঞান-বুদ্ধি থাকা সত্ত্বেও অনেক খারাপ বিষয় গ্রহণ করে ফেলি। না বুঝে অথবা খেয়ালের ভুলে খারাপ বিষয় গ্রহণ করার ফলে দুর্ভোগ বা অসুখে যতটা পড়তে হয়, তারচে` ঢের বেশি অসুস্থতা তৈরি হয় জেনেশুনে খারাপী করার ফলে।

তথাপি শিক্ষিতজনরাও জেনেশুনে প্রতিপদে অনেক অনেক খারাপ কাজ করে চলেছি, যার ইয়ত্তা নেই। ব্যক্তিভেদে এই ভালো ও মন্দ কাজের তালিকা বিভিন্ন রকমের। আমার একান্ত ধারণায়, আমাদের সমাজে ১০০% ভালো কাজের তালিকাভুক্ত ব্যক্তি কোটিতেও পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। তবে ৮০% ভালো কাজের তালিকার ব্যক্তি লক্ষের ঘরে পাওয়া যেতে পারে। আর ৫০% ভালো কাজের তালিকাসম্পন্ন মানুষ পাওয়া যেতে পারে শ`তে একজন।

সুধী পাঠক, এসব অপ্রিয় সত্য কথায় আমার ওপর চটে যাবেন না, প্লিজ। নিজের এবং আশপাশের মানুষদের চিন্তা ও কর্ম গভীর দৃষ্টিতে অবলোকন করে তারপর যদি আমার এ মতের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন, তাহলেতো এ অধমের ঠিকানা থাকছেই। তবে অনুরোধ না বুঝে, চিন্তা না করে এবং অন্তর্চক্ষু দিয়ে না দেখে কেবল এ লেখা পড়েই যদি কেউ ক্ষেপে যান বা রিএকটিভ হয়ে পড়েন, তাহলে সেটা আরেক অস্বাভাবিকতা ও অসুস্থতা নয় কি?

চরম হতাশা, মানসিক বিপর্যয় ও হীনম্মন্যতা থেকে সৃষ্ট এমন সব অমানবিক ও পাশবিক আচরণ দেখা যায় মানুষের মধ্যে, যা শৈশব-কৈশোরে জন্ম নিয়ে সুপ্ত অবস্থায় থাকে এবং সময়ে সুযোগে বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

যেসব কারণে বুদ্ধিমান বা সচেতনরা অনেক খারাপ বিষয়কে জেনেশুনেও গ্রহণ করে ফেলেন, তন্মধ্যে বিশেষ ক`টি নিম্নরূপ। ক) মন্দের প্রতিক্রিয়া ও পরিণতি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা বা জ্ঞানের অভাবে

নেতিবাচক বা খারাপ বিষয়াদি সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা প্রায় সবারই থাকে। কিন্তু যথেষ্ট জ্ঞান ও বিশ্লেষণী উপলব্ধি থাকে না অনেকেরই। তাই খারাপ কাজের পাপ ও প্রায়শ্চিত্তের প্রক্রিয়া-প্রভাব ও পরিণাম বা End result মালুম করতে না পারার কারণে অর্থাৎ ভুল, মিথ্যা ও নেতিবাচক কর্মের Engineering effect সম্পর্কে স্বচ্ছ ও সঠিক ধারণার অভাবে মানুষ জেনেশুনেও খারাপ কাজ করে ফেলে এবং তা যেমনি আচার-আচরণে, তেমনি খাদ্যদ্রব্য গ্রহণেও। উদাহরণস্বরূপ আমরা সবাই জানি মিথ্যা বলা পাপ। তথাপি প্রায়শই মিথ্যা বলে পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অথবা আপাত সুবিধালাভে সচেষ্ট হই। অথচ আমরা খেয়াল করি না যে মিথ্যা কথা আমরা মুখে বলি, তা সৃজন হয় আমাদেরই মস্তিষ্ক থেকে। সে মিথ্যা অন্যের মস্তিষ্কে ভালো বা মন্দ যেভাবেই গৃহীত হোক না কেন, আমাদের মস্তিষ্ক থেকে গৃহীত বা উত্থিত মিথ্যার প্রক্রিয়া-প্রমাণ- পরিণাম সবই আমাদের মস্তিষ্ক থেকে আমাদেরই দেহমনে দীর্ঘমেয়াদে সঞ্চারিত হবেই হবে। আলোকিত বিশেষ মানুষগণ সে মিথ্যার ভয়াবহ কালিমা বা অন্ধকার রূপ ভালোভাবে বোঝেন বলে তারা পরিস্থিতিজনিত কারণে এরূপ মিথ্যার বেসাতিতে কদাচিৎ পড়লেও যথাশীঘ্র বিবেক ও স্রষ্টার কাছে তওবা করে এবং সংশ্লিষ্টদের নিকট ক্ষমা চেয়ে আত্মশুদ্ধিতে উজ্জীবিত হন; মুছে ফেলেন পাপের কালিমা। কিন্তু হতভাগা সাধারণ মানুষ তার দেহাভ্যন্তরের Software engineering -এর এসব সূক্ষ্মতা, গভীরতা ও দীর্ঘমেয়াদি প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা করতে না পেরে পদে পদে মিথ্যা, অস্বচ্ছতা, মেকি ও কৃত্রিমতাকে আঁকড়িয়ে জীবন-যৌবন ও সুখ-শান্তি বিনষ্ট করে চলছেন। এতো গেল আচরণগত খারাপের উদাহরণ। খাবারের ক্ষেত্রে এ খারাপীর উদাহরণ আরও বেশি। যেমন আমরা অনেকেই বিভিন্ন খাবারের ক্ষতিকর প্রভাবের কথা সাধারণভাবে শুনে থাকি। কিন্তু কোন্্ খাবারে ক্ষতি কতটা, কীরূপ, কীভাবে এবং কতদূর সে সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের অভাবে মুখরোচক অথচ ক্ষতিকর খাবার খেয়ে চলছি হরদম। এর ক্ষতিকর প্রভাব হয়ত আপাত উপলব্ধ হয় না, কিন্তু যখন ভয়াবহ ক্যান্সার বা পাথুরে রোগের মতো মারাত্মক অসুখে পড়ি তখন নিজেতো শেষ, ডাক্তারবাবুও বোকা বনে যান। তা সত্ত্বেও সবাই ক্যান্সারের আধাররূপী বিভিন্ন অখাদ্য খেয়ে চলেছি। যার ফলে কোক-ফান্টা বা সাদা চিনির মতো কৃত্রিম, রঙিন ও রাসায়নিক খাদ্যোৎসব এবং রমরমা বাণিজ্য বেড়েই চলছে।

খ) প্রবৃত্তিগত কারণ বা খাসলতের দোষে
অশিক্ষিত বা অসচেতন মানুষ মানে আঁধারের বাসিন্দা। কিন্তু শিক্ষিত ও সচেতন কিছু কিছু মানুষ আলোর জগতে ঢুকেও প্রবৃত্তিগত কারণে অন্ধকারের পাপিষ্ঠ জীবন যাপন করেন। খেয়ালের ভুলে ও খাসলতের দোষেদুষ্ট এরূপ মানুষ কিছুতেই ভালোত্ব, কল্যাণ ও ঈমানের পথে আসতে বা সেপথে স্থায়ী হতে সক্ষম হন না। এঁরা যা বুঝছেন বা বুঝেছেন, তা-ই। প্রবৃত্তি ও খাসলতের পোকা তাদের মাথামুন্ডু এমনিভাবে দখল করে নেয় বা তাদেরকে পর্যুদস্ত করে ফেলে এবং ঐ প্রবৃত্তি ও খাসলত দ্বারা তাদের সমগ্র দেহ-মন এমনই Programmed হয়ে যায় যে, এর বাইরে এসে বিজ্ঞানসম্মত মঙ্গল ও ভালোত্বকে গ্রহণ করতে গেলেই অন্তর্জ্বালা, অন্তর্দ্বন্দ্ব তথা অন্তর্যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় এবং সেক্ষেত্রেও তারা অশান্তিবোধ করতে থাকে।

প্রবৃত্তিগত এসব কারণে জেনেশুনেও আমরা অনেকেই অনেক মিথ্যা ও অসুন্দরকে বর্জন করতে বারংবার ব্যর্থ হই। এরূপ নেতিবাচক কু-কর্মযজ্ঞ যেমনি চলছে খাবারের ক্ষেত্রে, তেমনি চলছে আচার-আচরণেও। ফলে স্বাস্থ্য ও সুখের অবস্থা কত যে বেহাল, তা সহজেই অনুমেয়। নিজ শরীরে নিজেরই সৃষ্ট ক্যান্সার বা পাথুরে রোগ সম্পর্কে উপরে প্রদত্ত উদাহরণ এক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে। অধিকাংশ মানুষ না জেনে অখাদ্য খাবার খেয়ে থাকে; আবার কিছু মানুষ জেনেশুনেও বিষপান করে। অর্থাৎ অখাদ্য-কুখাদ্য খেয়ে এবং অসদাচরণ ও অন্যায় করে তারা নিজের জীবনকে যে অপবিত্র, পঙ্কিল ও অসুখী করে ফেলে তা বদভ্যাস ও খাসলতের বশেই করে থাকে। তাই কুপ্রবৃত্তি পরিবর্তনের মাধ্যমেও রোগ-শোক এবং পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্তিলাভ সম্ভব। কুপ্রবৃত্তি বা বদভ্যাস পরিবর্তন কঠিন কিছু নয়, চাইলেই তা সম্ভব। সে টেকনিক জানতে এবং উন্নততর মানুষ হওয়ার গুণ ও কৌশল শেখা বা চর্চার জন্য প্রতি শনিবার বিকেলে ক্যাম্পাস কার্যালয়ে আসতে পারেন।

গ) লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, অধৈর্য ও ক্ষমাহীন মানসিকতার প্রভাবে
শিক্ষিতজনরাও জেনেশুনে অনেক খারাপ বিষয়কে গ্রহণ করে ফেলেন এবং ভালোত্ব ও সুখ-সমৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত হন। কোন্্টি ভালো কোন্টি মন্দ তা জানা থাকা সত্ত্বেও মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যা বা মানসিক সংকীর্ণতার কারণে তারা শিক্ষা-দীক্ষা নিয়েও সর্বক্ষেত্রে ভালোকে গ্রহণ এবং মন্দকে বর্জন করতে পারেন না। নিজের মধ্যে মানসিক উদারতা তৈরি করতে না পারলে ভালোত্বের স্বাদ আস্বাদন বড়ই দুরূহ। বাইরের শিক্ষার পাশাপাশি মানসিক উৎকর্ষ সাধন করতে না পারলে নিজের মধ্যে জ্ঞানের আলো তৈরি হয় না তথা প্রতিভা বিকশিত হয় না। ফলে অশিক্ষিতদের সমস্যাতো রয়েছেই; অন্যদিকে একাডেমিক বা পুঁথিগত শিক্ষা-দীক্ষা থাকা সত্ত্বেও জ্ঞানের আলো বঞ্চিত হয়ে শিক্ষিতরাও অসুন্দর ও অসত্যকে আলিঙ্গন করতে থাকে এবং ইহকাল ও পরকাল সবই হারায়। তাই যারা পুঁথিগত শিক্ষায় অথবা আত্ম-উপলব্ধিতে নিজের মানসিক উৎকর্ষ সাধন বিশেষত নির্লোভ, নিরহংকার, অহিংসা, ধৈর্য ও ক্ষমার মানসিকতা লালন ও পালন করতে পারেন তারাই কেবল নিজের ভুবনে ঔদার্য-আনন্দের কারণে অনেক অসুখ-বিসুখ যেমনি জয় করে ফেলেন, তেমনি অন্য মানুষদের কাছেও বরণীয়-স্মরণীয় বিশেষ মানুষরূপে জীবনকে সার্থক ও সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হন।

তাই প্রাকৃতিকভাবে সুস্থতালাভের জন্য নিজের ভুবনে জ্ঞানের আলো তৈরি করা অত্যাবশ্যক। সেই জ্ঞানের আলোয় মনোরাজ্যের সকল অন্ধকার বিদূরিত করতে পারলে রোগ-শোক-জরা প্রভৃতি জয় করা একেবারেই সহজ। তাই মানসিক উৎকর্ষ ও আত্মশুদ্ধির অবিরাম চর্চার মাধ্যমে আত্মোপলব্ধি ও আত্মার সুখ বিনির্মাণে সচেষ্ট হওয়া সবার জন্যই জরুরি। এক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে এরূপ চর্চা করতে অনেকেই পারেন না, আবার কেউ কেউ পারেন বলেই তারা অনেক মানুষের মাঝে বিশেষ ও উন্নততর মানুষ হিসেবে পরিগণিত হন।